জামান মৃধা, ডিমলা (নীলফামারী)-
অনিয়ম আর দূর্নীতি বলা চলে অনেকটাই হরিলুটের ময়দানে পরিণত হয়েছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খগাবড়বাড়ী বালিকা দ্বিমূখী উচ্চ বিদ্যালয়।
প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষককের সেচ্ছাচারীতায় অস্তিত্ব সংকটে পরেছে বিদ্যালয়টি। খেয়াল খুশি মতো চলছে বিদ্যালয় পরিচালনা। তাদের কাছে বাকী শিক্ষকরা যেন অসহায়। অনিয়ম ঘেঁটে যোগসাজশের সত্যতা পাওয়া গেছে প্রধান শিক্ষক মারুফা আক্তারের বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার প্রকল্প নামে প্রকল্পে ৪টি কম্পিউটার, শিক্ষা মন্ত্রনালয় হতে একটি দোয়েল ব্যান্ডের ল্যাপটপ এবং পরবর্তীতে অন্য প্রকল্পে পাওয়া এইচপি ব্যান্ডের একটি ল্যাপটপ থাকার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানে রয়েছে একটি অকেজো কম্পিউটার।
আর এইচপি ব্যান্ডের একটি ল্যাপটপ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের ব্যক্তি দখলে এবং বাকিগুলোর হিসেব পাওয়া যায়নি। এক একর আবাদি জমি থাকলে জানেন না প্রধান শিক্ষক ও বাকী শিক্ষকগণ। তবে সভাপতির দাবি, সেই জমি ইতিপূর্বের প্রধান শিক্ষক (প্রধান শিক্ষকের বাবা) এর দখলে রয়েছে।
২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ বিলের বকেয়ার দায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলেও পবিসের তথ্য মতে নতুন ভাবে সংযোগ গ্রহন করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে চার মাসের বকেয়া বিল রয়েছে ১৭৩০ টাকা। নেই কোনো শ্রেনী কক্ষে বা অফিস রুমে বিদ্যুৎ সংযোগ। প্রতিটি শ্রেনী কক্ষের ফ্যান গায়েব। শিক্ষার্থীদের জন্য গত অর্থ বছরে স্থানীয় সংসদের দেওয়া ৬টি সেলিং ফ্যানগুলোও অদৃশ্য।
২০২২ সালে বিদ্যালয়ের পুরনো ঘর সংস্কারের উদ্যোশে ভাঙ্গানো টিন সেট চারচালা ঘরের ১৩০ বান টিন উধাও, বাজেয়াপ্ত বাথরুমের প্রায় ১০ হাজার ইটের সন্ধান আজও পায়নি ম্যানেজিং কমিটি। প্রতিষ্ঠানে একই পরিবারের চারজন শিক্ষক কর্মচারী থাকলে একজন অবসরে, বাকী তিনজনের মধ্যে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান ও অফিস সহায়ক পদে কর্মরত একজন।
এলজিএসপি সহ বিভিন্ন সময়ে চেয়ার, টেবিল, বেঞ্জ যা স্টীলের বডিতে তৈরীকৃত মালামাল বিক্রয়ের অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রতিটি মালামাল বিক্রয়ের দরপত্র, বিজ্ঞাপন, নোটিশ, ম্যানেজিং কমিটির কোনো প্রকার সভার রেজুলেশন দেখাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক। এছাড়াও ফরম পূরন, সেশন চার্জ, স্কাউট ফির কোনো লেনদেনের রশিদ মেলেনি।
জ্ঞান চর্চায় বিচ্ছিন্ন শিক্ষার্থীরা বিশ্বে যেখানে জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিযোগিতা আর সৃজনশীলতায় মেতে উঠেছে অংশগ্রহণে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশেও প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সৃজনশীলতার জন্য প্রতিষ্ঠানে সরকার করছে বিশেষ ব্যবস্থা। আর সৃজনশীলতা তো দূরের কথা বিজ্ঞানাগারে যেখানে থাকার কথা বিজ্ঞান বিভাগের সরঞ্জাম সে জায়গার স্টক রুম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
সেখানকার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানেন না বিজ্ঞানাগার কী? সেখানে কী সেখানো হয়। ১০ শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, ঠিক মতো ক্লাস হয় না। সৃজনশীলতা আর বিজ্ঞানাগার তো দূরের কথা।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মারুফা আক্তার লিজাকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এ গুলো সমস্ত প্রোপাগান্ডা। আমার বিরুদ্ধে একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে। সত্যের জয় একদিন হবেই।